আপনারাতো মনে করেন একজন পুলিশ কনস্টেবলের আর কি কষ্ট? সুন্দর তো সব সময় শুধু দাড়িয়ে থাকে। তাহলে চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক একজন পুলিশ কনস্টেবলদের জীবন সংগ্রাম । ব্যবহার করা নামটি ছদ্মনাম ।
রিফাত ইসলাম (ছদ্মনাম) প্রায় ১২ বছর আগে পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল হিসাবে যোগদান করেন । সবার মত তারও আশা ছিল একটা সরকারি চাকরি পেয়ে তার জীবন পাল্টে যাবে । জীবনের অনেক ক্ষেত্রেই এই কথাটি সত্য হলেও জীবনে তার যে পরিবর্তন টি এসেছে তার দিকও দেখতে হবে ।
রিফাতকে দিনে ১১ ঘণ্টার শিফটে কাজ করতে হয় । এবং এর মাঝে নাই সাপ্তাহিক ছুটি বা নেই কোনো সরকারি ছুটি । তার কাজের কোনো ছুটি নেই বললেই চলে । সন্ধ্যা ৭তার পর থেকেই ঢাকার এক কার রাস্তার মোড়ে তার শিফট শুরু হয় । তাকে কাজ করতে হয় একেবারে সকাল ৬ টা পর্যন্ত । সারারাত জেগে তাকে তার শিফট সম্পূর্ণ করতে হয় ।
আরও পড়ুন
স্ত্রীর প্রেমিককে পিটিয়ে হত্যা করলেন তার স্বামী
সেই ভাইরাল মেয়ের কাশবনের ভিডিও লিংক
৬ মাসের প্রেমে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক
আর থাকছে না ফেসবুক নামে কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
আবার তার শিফটের জায়গায় যাওয়ার আগে পরে আবার প্রায় ৪ ঘণ্টা কলর যায় লম্বা সারিতে দাড়িয়ে অস্ত্র সংগ্রহ করতে এবং ঢাকা শহরের যানজট পেরিয়ে তার গন্তব্য স্থানে পৌঁছাতে । শিফট শেষ করে তার বাসেমেন্ট এ আস্ত আবার তার প্রায় ১ ঘণ্টা লেগে যায় । সব মিলিয়ে দিনের ১৬ ঘণ্টা এভাবেই যায়। কোনো কোনো দিন হয়তো এর চাইতেও আরো বেশি সময় লাগে তার ।
রিফাত বলেন, ‘আমি আমার মনের অনেক উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে পুলিশে যোগ দিয়েছিলাম । প্রায় ১০ বছর কাজ করার পর এখন আমার মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে যা ভেবে ছিলাম বাস্তবতা সেরকম নয় তার থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন । আমাদেরকে অনেক বেশি সময় ধরে অনেক বেশি কাজ করতে হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রচণ্ড চাপে থেকে এত লম্বা সময় কাজ করলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে মানুষের জীবনের ঝুঁকিও তৈরি হতে পারে । এতে অভ্যাস তৈরি হয়ে মানুষ পারিবারিক জীবন এবং কর্মক্ষেত্রে অসুখী হয় ।
প্রথম ১৫ মাসে প্রত্যেক কনস্টেবল পুলিশ কমিউনিটি ব্যাংকে ২ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন। এছাড়াও একটি পুলিশ শপিং মলে এককালীন ১০ হাজার টাকা দিতে হয় তাদেরকে।
আর্থিক অনটনের পাশাপাশি, তারা প্রয়োজনের সময়ও ছুটি নিতে পারেন না এবং যার ফলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মনোমালিন্যও হয় তাদের অনেক ।
পুলিশ আইন ১৮৬১ অনুযায়ী সাপ্তাহিক ছুটির কোনো বিধান নেই । তবে বাহিনীর সদস্যরা ‘বিশ্রাম’ নিয়ে শারীরিক অভ্যাস দূর করার জন্য এক দিন ছুটি পেতে পারেন ।